অনলাইনে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি কি অনলাইনে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন বা ঘরে বসে সিটি ব্যাংকের (City Bank Bangladesh ltd) একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন? আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য। কথা না বাডিয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বাংলাদেশের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান গুলোও এখন দিন দিন ডিজিটালাইজ হচ্ছে। ঘরে বসে একাউন্ট খোলা, ব্যালেন্স অনুসন্ধান, টাকা-পাঠানো, টাকা উত্তোলন সহ নানা সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকের মতই সিটি ব্যাংকও ঘরে বসে আপনি আপনার একাউন্ট তৈরি করে পারবেন।
ঘরে বসে সিটি ব্যাংকের মোবাইল এপ্লিকেশন (City Ekhoni Account) ব্যবহার করতে নিচের পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন।
অনলাইনে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনলাইনে বা ঘরে বসে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে। ১৮ বছর এর কম হলে আপনি অনলাইনে একাউন্ট করতে পারবেন না। এর পাশাপাশি অবশ্যই আপনার স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জাতীয় পরিচয় পত্র (একাউন্ট যার করতে চাচ্ছেন তার)
- নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর
- নমিনির ছবির অনলাইন কপি
ঘরে বসে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার ধাপ গুলো

#এপ ইন্সটলেশন: প্রথমে আপনি আপনার এন্ড্রোয়েড ফোন বা আইফোনের নিজস্ব এপ স্টোর থেকে City Ekhoni Account এপ্লিকেশন টি ইন্সটল করবেন এবং প্রয়োজনীয় পারমিশন গুলো এলাউ করে দিবেন।
#ভাষা নির্বাচন: এপ্লিকেশন টি ওপেন করলে প্রথমেই আপনাকে ভাষা নির্বাচন করতে বলবে। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী বাংলা বা ইংরেজি ভাষা সেলেক্ট করবেন।
#একাউন্টের ধরণ: ঘরে বসে আপনারা Individual Account এর পাশাপাশি Business Account ও তৈরি করতে পারবেন। Business Account এর জন্য উপরের কগজপত্রের পাশাপাশি আপনার বিজনেস ইনফো (টিন সার্টিফিকেট, প্রোপাইটর ইনফো) প্রয়োজন হবে।
#ট্রানজেকশন লিমিট: এপর্যায়ে আপনি আপনার মাসিক লেনদেনের সাম্ভব্য পরিমাণ সেলেক্ট করবেন। আপনাদের সামনে ২ টি অপশন আসবে। এক, মাসিক ১০০,০০০ টাকা বা তার কম; দুই, মাসিক ১০০,০০০ টাকার বেশি। এক্ষেত্রে প্রথমটিই সেলেক্ট করবেন, এতে খুব সহজেই একাউন্ট করতে পারবেন।
#ফোন নম্বর ভেরিফিকেশন: আপনি আপনার ব্যবহৃত সচল ফোন নম্বর টি দিবেন এবং ওটিপি এর মাধ্যমে ফোন নম্বর টি ভেরিফাই করবেন। ফোন নম্বর টি নির্বাচন এর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন, কারণ পরবর্তীতে একাউন্টের লেনলেন সহ সকল ইনফো আপনার ঐ ফোন নম্বরে জানতে পারবেন।
#পরিচয় পত্র ভেরিফিকেশন: আপনি আপনার স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের দিক ও পিছনের দিক আপলোড করবেন এবং আপলোড হয়ে গেলে নেক্সট এ ক্লিক করবেন। পরিচয় পত্রের ছবি তোলার সময় খেয়াল রাখবেন যেন সব তথ্য স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়।
#সেলফি ফেরিফিকেশন: এবার আপনি আপনার সেলফি আপলোড এর মাধ্যমে আপনার সেলফি ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করবেন। পর্যাপ্ত আলো সম্পন্ন জায়গায় এই কাজটি করার চেষ্টা করবেন তাহলে খুব সহজেই ভেরিফাই হয়ে যাবে।
#পেশা নির্বাচন: আপনি যে পেশায় নিযুক্ত আছেন সেটা সেলেক্ট করে দিবেন। উদাহরণ স্বরুপ, আপনি যদি ছাত্র হন তাহলে STUDENT, কৃষক হলে FARMER বা আপনার পেশা সেকেল্ট করে দিবেন।
#ঠিকানা: আপনার বর্তমান ঠিকানার পাশাপাশি আপনার মোবাইল নম্বর দিবেন। এখানে সবকিছু ইংরেজিতে লিখতে হবে। নমুনা: House/Holding:- ; Village: Monglakuti, Post: Monglakuti – 5450; Pirgachha; Rangpur; Phone: 0153*******;।
#ইমেইল: আপনার নিত্য দিনেব ব্যবহৃত ইমেল আইডি টি দিবেন।
#নমিনির বিবরণ: নমিনির নাম, নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রে নম্বর, একাউন্ট হোল্ডারের সাথে নমিনির সম্পর্ক ও নমিনির ছবি আপলোড করে নেক্সট এ ক্লিক করবেন।
#FATCA Declaration: এই সেকশনে সবগুলোই “NO” রাখবেন, এগুলা ইউএস সিটিজেন বা ইউএস গ্রিন কার্ড হোল্ডারদের জন্য।
#শাখা নির্বাচন: আপনারা একাউন্টের ধরন, ব্রাঞ্চ (যে ব্রাঞ্চে একাউন্ট করতে চাচ্ছেন), ট্রামস এন্ড কন্ডিশন এ টিক মার্ক দিয়ে “CREATE YOUR ACCOUNT” এ ক্লিক করবেন।
ব্যাস কাজ শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যে আপনি আপনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কনফার্মেশন এসএমএস এর মাধ্যমে আপনি আপনার একাউন্ট নম্বর ও একাউন্ট স্টাটাস জানতে পারবেন। আপনার একাউন্ট টি এক্টিভ হয়ে গেলে আপনি সিটি টাচ (Citytouch) এপ্লিকেশনের মাধ্যমে আপনার একাউন্টে লেনদেন করতে পারবেন।
ব্যাংকে গিয়ে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনলাইনের পাশাপাশি ব্যাংকে গিয়েও খুব সহজে সিটি ব্যাংকের একাউন্ট করা যাবে। এবং এই একাউন্ট ও সিটি ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং এপ্লিকেশন সিটি টাচের মাধ্যমে এক্সেস করা যাবে এবং ব্যবহার করা যাবে। ব্যাংকে গিয়ে সিটি ব্যাংক একাউন্ট করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (একাউন্ট যার করতে চাচ্ছেন তার)
- একাউন্ট হোল্ডারের ছবি
- নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- নমিনির ছবি
ব্যাংকে গিয়ে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন যেভাবে
প্রথমে আপনাদের সিটি ব্যাংকের যে কোন শাখায় যেতে হবে। ব্যাংকের শাখায় যাওয়ার পর ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার পর নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফর্ম নিতে হবে। ফর্ম নেয়ার পর যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে (ফর্ম পূরণে অসুবিধা হলে বা কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে সাহায্য নেয়া যাবে বা তাদের কাছে ফর্মটি পূরণ করে নেয়া যাবে।)। পূরণ হয়ে গেলে উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নির্ধারিত ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে।
আপনার দেওয়া তথ্যাদি এবং কাগজপত্র সঠিক হলে নির্ধারিত ব্যাংক কর্মকর্তা আপনার একাউন্ট এক্টিভ করে দিবে এবং আপনাকে একটি হিসাব নম্বর বা ব্যাংক একাউন্ট নম্বর দিয়ে দিবে।
সিটি ট্যাচ এপ্লিকেশনে একাউন্ট লগিন করার নিয়ম
সিটি বাংকের মোবাইল ব্যাংকিং এপ্লিকেশন সিটি ট্যাচ থেকে আপনারা লেনদেন, ব্যালেন্স অনুসন্ধান থেকে শুরু করে প্রায় সকল কাজ করতে পারেন। সিটি টাচ এপ্লিকেশনে ব্যাংক একাউন্ট লগিন করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
- প্রথমে এখানে ক্লিক করে বা গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপেল এপ স্টোত থেকে সিটি ট্যাচ এপ টি ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিবেন।
- এবার এপ টি ওপেন করে নির্ধারিত পার্মিশন গুলো দিবেন এবং এর পর “Sign up now!” এ ক্লিক করবেন।
- এখন আপনার একাউন্ট নম্বর দিবেন। আপনার একাউন্ট নম্বর সঠিক হলে অটোমেটিক আপনার নাম চলে আসবে।
- আপনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর টি দিবেন, এরপর আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি ইউজার নেম দিবেন।
- টার্মস এন্ড কন্ডিশনে ক্লিক করে নেক্সট এ ক্লিক করেবন।
- মোবাইল ওটিপি ভেরিফাই করবেন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইন আপ প্রসেস শেষ করবেন।
- এবার আপবনা ব্যবহার করা ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন এ ক্লিক করলেই আপনার একাউন্ট লগিন হবে।
আশাকরি অনলাইনে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম বা ব্যাংকে গিয়ে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম বা সিটি ট্যাচ এপ্লিকেশনে একাউন্ট লগিন করার নিয়ম নিয়ে আপনাদের সকল কনফিউশন ক্লিয়ার হয়েছে। এরপরও কিছু জানার থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। আমারা উত্তর দিয়ে দিবো।
আর্টিকেল টি ভালো লাগলে আমাদের অন্য আর্টিকেল পড়তে ভুলবেন না, ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।
আপনার বঙ্গব্লগ সাইটটি আমি নিয়মিত ফলো করি। লেখা গুলা ভাল্লাগে, পুরো পোস্টটা না পড়েও সমস্যার সমাধান পেয়ে যাই। আজকের পোস্টটি আরও সুন্দর হয়েছে।
মজার বিষয় হচ্ছে, ইদানিং আমি একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এর আগে এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকার কারনে কিভাবে কি করবো বুঝতেছিলাম না। আজ এই পোস্টটা পড়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো সম্পর্কে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে! এভাবে ও এই ধরনের আরও ব্লগ পোস্ট চাই!!!
ধন্যবাদ স্যার।